আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু ক্লিন এজেন্ট ফায়ার এক্সটিংগুইশার কি? ইহার মধ্যে কোন ধরনের গ্যাস থাকে? ইহা কোন ধরনের আগুন নেভাতে সক্ষম ইত্যাদি।
যেহেতু ক্লিন এজেন্ট টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশার বাজারে নতুন। সেহেতু ইহার সম্বন্ধে অনেকেই জানেন না। তাই wbfirebrigate এর আজকের প্রচেষ্টা আপনাকে এই সম্বন্ধে অবগত করান।
আজকালকার সময় যে ধরনের এক্সটিংগুইশার দেখা যায় তা হল DCP, Co2, Water এবং Foam টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশার। কিন্তু ক্লিন এজেন্ট টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশার খুব কম দেখা যায় তার মূল কারণ এই ধরনের ফায়ার এক্সটিংগুইশারে যে ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় তা খুবই দামি হয়।
ক্লিন এজেন্ট ফায়ার এক্সটিংগুইশার কি ?
ইহা দেখতে 'স্টোর প্রেসার ডিসিপি টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশারের' মতো অনেকটা। এর মধ্যে এক ধরনের লিকুইড থাকে। এক্সটিংগুইশারটি যদি হেলানো হয় তাহলে এর মধ্যে জল আছে বলে মনে হবে। কিন্তু আদৌ এটি জল না, এটি এক ধরনের কেমিক্যাল যা বাইরে বাতাসের সংস্পর্শে আসামাত্র গ্যাসের আকার ধারণ করে।
এটি আগুনকে অতি সহজে Cooling ও Smothering পদ্ধতিতে চটজলদি নিভিয়ে ফেলে। গ্যাস টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশারের একটি উদাহরণ হল ক্লিন এজেন্ট টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশার। ইহার মধ্যে একটি প্রেসার গেজ লাগানো থাকে যা ব্যবহারকারীকে বুঝতে সাহায্য করে এটি আদৌ ব্যবহারের উপযোগী কিনা।
প্রেসার গেজের কাঁটা টি সবুজের রং-এর মধ্যে থাকলে ইহাকে ব্যবহার উপযোগী বলে ধরা হয়। সবুজ রংটি দুটি লাল রং-এর মাঝে থাকে। কাটাটি যদি বামদিকে লাল রঙের ওপর থাকে তাহলে বুঝতে হবে এক্সটিংগুইশারটি খালি আছে এবং কাটাটি যদি ডান দিকে লাল রঙের উপরে থাকে তাহলে বুঝতে হবে এক্সটিংগুইশারের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত প্রেসার আছে যা কিনা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ।
এটি ৪ কেজি ওজনের ক্লিন এজেন্ট এক্সটিংগুইশার |
ইহা কে 'ক্লিন এজেন্ট' বলা হয় কেন ?
এই ধরনের এক্সটিঙ্গুইসার গুলি অন্যান্য এক্সটিঙ্গুইসেরর তুলনায় পরিবেশ বান্ধব হয়। এগুলি ব্যবহারে পরিবেশ ও যার উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে তার কোন প্রকার ক্ষতি না করে আগুন কে অতি সহজে ও দ্রুত নিভিয়ে ফেলে। ক্লিন এজেন্ট এক্সটিংগুইশার বাণিজ্যিক ও শিল্পে ব্যবহৃত উপকরণ গুলি সুরক্ষিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
যেগুলো কিনা খুব দামী, সংবেদনশীল ও অপরিবর্তনীয় সরঞ্জাম। এই গুলির উপর ক্লিন এজেন্ট ব্যবহার না করে যদি জল, পাউডার বা ফোম টাইপ এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করা হতো তাহলে কর্তৃপক্ষ কে এক বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো। হয় সরঞ্জাম গুলি অকেজো হয়ে পরত কিংবা পুরো-পুরি খারাপ হয়ে পরত।
ক্লিন এজেন্ট ফায়ার এক্সটিংগুইশার কোন ধরনের আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হয় ?
এই ধরনে এক্সটিংগুইশার ক্লাস এ, বি, সি ও ইলেকট্রিক ফায়ারে ব্যবহার করা হয়। ক্লাস-এ অর্থাৎ কাঠ-পেপার-কাপড় দ্বারা যে সমস্ত আগুন লাগে, ক্লাস-বি অর্থাৎ পেট্রল-ডিজেল-তেল দ্বারা যে সমস্ত আগুন লাগে, ক্লাস-সি অর্থাৎ বিভিন্ন দাহ্য গ্যাস দ্বারা যে সমস্ত আগুন লাগে। এই ধরনের এক্সটিংগুইশার চালানোর পদ্ধতি অন্যান্য এক্সটিংগুইশারেরই মত হয়।
এক্সটিংগুইশার চালু করার নিয়ম জানা না থাকলে দেখুন PASS METHOD
এই ধরনের এক্সটিঙ্গুইসার গুলি সাধারণত যেখানে দেখা যায় তা হল রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া, অফিস, সার্ভার রুম, হোটেল, রেস্তোরা, ইলেকট্রিক প্যানেলস, ইনস্টিটিউশন, অয়েল স্টোরেজ ইত্যাদি ।
ক্লিন এজেন্ট টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইসারে কোন গ্যাস ব্যবহার করা হয় ?
সাধারণত ক্লিন এজেন্ট টাইপ এক্সটিংগুইশারে তিন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার হতে দেখা যায় HCFC (Hydro Chloro Fluoro Carbon), HFC (Hexa Fluoro Carbon) ও Hefta Fuloro Carbon । তবে এই তিন ধরনের কেমিক্যাল একটি এক্সটিঙ্গুইসারে দেখা যায় না। যে কোন একটি কেমিক্যাল একটি এক্সটিংগুইশারে দেখা যায়। বাজারে বিভিন্ন ধরনে এক্সটিঙ্গুইসার কোম্পানি আছে এক একটি কোম্পানি নিজেদের পছন্দ অনুসারে একটি কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকে। কোন এক্সটিংগুইসারে কোন কেমিক্যাল আছে জানতে এক্সটিঙ্গুইসারের গায়ে যে স্পেসিফিকেশন আছে তা দেখতে হবে।
ক্লিন এজেন্ট টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইসারের কার্যক্ষমতা বা ডিসচার্জ টাইম
এই ধরনের এক্সটিংগুইশার গুলি সাধারণত দু-কেজি, চার-কেজি, ছয়-কেজি ও নয়-কেজির হয়ে থাকে। এগুলো অতি সহজেই খোলা মার্কেটে পাওয়া যায়। এগুলো ওজনে অনেক হালকা হয়। এই ধরনের এক্সটিঙ্গুইসারের কার্যক্ষমতা ৮ থেকে ১৩ সেকেন্ড। একটি ২ কেজি ওজনের এক্সটিংগুইশার চলতে পারে ৩.৭ সেকেন্ড, ৪ কেজি ৬.৯, ৬ কেজি ৯.৪ সেকেন্ড ও ৯ কেজি ১৪ সেকেন্ড।
ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্প্রিংকলার সম্পর্কে জানা না থাকলে জেনে নিন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ