আপনি যদি এমন সংস্থার সাথে যুক্ত (প্রাইভেট বা সরকারি) যেখানে কর্মচারীদের পেনশন এর কোন সুবিধা নেই তাহলে অটল পেনশন যোজনা হতে পারে একটি ভালো পেনশন স্কিম।
অটল পেনশন যোজনা কি ?
এটি একটি সরকারি যোজনা। যেখানে সরকার ব্যক্তিকে গ্যারান্টি প্রদান করেন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে পেনশন দেওয়ার। বিনিময়ে ব্যক্তিকে খুব সামান্য পরিমাণ একটি অর্থ মাসিক বা ত্রৈমাসিক বা অর্ধ বার্ষিক বা বার্ষিক প্রদান করতে হয়।
অটল পেনশন যোজনা বাংলায় বিবরণ |
অটল পেনশন যোজনার সুবিধা
অটল পেনশন স্কিম অন্যান্য স্কিমের থেকে আলাদা হওয়ার মূল কারণ এখানে যিনি পেনশন যোজনাই নাম নথিভুক্ত করবেন তার ৬০ বছর হওয়ার পর তিনি তো পেনশন পাবেনই এবং তার মৃত্যুর পর তার স্বামী বা স্ত্রী তিনিও পেনশন পাবেন। এবং সবশেষে তার মৃত্যুর পর তার যে নমিনি থাকবে সে এককালীন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবে। নিম্নে আরো বিস্তারিত জানব..
অটল পেনশন যোজনা কারা নিতে পারবে ?
বয়স সীমা - ১৮ বছর থেকে ৪০ বছর। পেনশন নেওয়ার জন্য মিনিমাম কুড়ি বছর এই যোজনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে।
কত টাকা পেনশন পাবেন ?
এটি নির্ভর করবে কত টাকার পেনশন আপনি নিতে চাইছেন। সর্বনিম্ন ১০০০, ২০০০, ৩০০০, ৪০০০ এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকার পেনশন নিতে পারেন।
পেনশন নেওয়ার জন্য কত টাকা দিতে হবে ?
সর্বনিম্ন মাসিক
- ১০০০ টাকা পেনশন নিতে হলে দিতে হবে ৪২ টাকা
- ২০০০ টাকা পেনশন নিতে হলে দিতে হবে ৮৪ টাকা
- ৩০০০ টাকা পেনশন নিতে হলে দিতে হবে ১২৬ টাকা
- ৪০০০ টাকা পেনশন নিতে হলে দিতে হবে ১৬৮ টাকা
- ৫০০০ টাকা পেনশন নিতে হলে দিতে হবে ২১০ টাকা
অটল পেনশন যোজনার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন ?
যেহেতু এটি একটি কেন্দ্রীয় সরকারের যোজনা সেহেতু অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবে করার সুযোগ আছে।
অনলাইন - আপনি যদি নেট ব্যাংকিং ব্যবহার করেন তাহলে যে ব্যাংকে আপনার সেভিংস একাউন্ট আছে সেই ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সহজে করতে পারবেন।
অফলাইন - আপনার যে ব্যাংকে বা পোস্ট অফিসে সেভিংস একাউন্ট আছে সেখানে গিয়ে ফর্ম ফিলাপ করতে পারেন। বা অটল পেনশন যোজনা ফর্ম 👈এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করে এবং পরে সেটি প্রিন্ট আউট করে ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে জমা করতে পারেন।
অটল পেনশন যোজনা বাংলায় বিবরণ
১) স্কিমে নাম নথিভুক্ত করে যদি সঠিক সময়ে টাকা না দিতে পারি তাহলে কি হবে ?
তার জন্য প্রিমিয়াম (যত টাকা মাসিক দেবেন বলে ঠিক করেছেন) অনুসারে প্রত্যেক মাসে কিছু অতিরিক্ত টাকা ফাইন হিসেবে দিতে হবে। উদাহরণ:
১০০ টাকার প্রিমিয়ামে ১ টাকা প্রতি মাসে।
১০১-৫০০ টাকার প্রিমিয়ামে ২ টাকা প্রতি মাসে।
৫০১-১০০০ টাকার প্রিমিয়ামে ১ টাকা প্রতি মাসে।
১০০১ টাকার ওপরের প্রিমিয়ামে ১ টাকা প্রতি মাসে।
২) স্কিম শুরু করার পর পেনশন নেওয়ার পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যাবে ?
হ্যাঁ যাবে বছরে একবারই।
৩) পেনশন কত বছর পর পাওয়া যাবে ?
৬০ বছর পর।
৪) ৬০ বছর আগে পেনশন কারীর মৃত্যু হলে কি হবে ?
তার স্বামী বা স্ত্রী চাইলে এটি চালিয়ে যেতে পারে, পেনশন কারীর ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত। বা জমা টাকা তুলে নিতে পারে সুদ সমেত।
৫) ৬০ বছর পর পেনশন কারীর মৃত্যু হলে কি হবে ?
৬০ বছর পর মৃত্যু হলে পেনশন কারির স্বামী বা স্ত্রী পেনশন পাবেন। তারপর তার স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যু হলে তার যে নমিনি থাকবে সে এককালীন কর্পাস পাবেন। কর্পাস কথার অর্থ পেনশন কারী যদি মাসিক হাজার টাকার পেনশন নেওয়ার জন্য টাকা জমা করে থাকে তাহলে তার নমিনি এককালীন ১.৭ লাখ টাকা পাবে, সেইভাবে ২০০০ টাকা হলে - ৩.৪ লাখ, ৩০০০ টাকা হলে ৫. ১ লাখ, ৪০০০ টাকা হলে ৬.৮ লাখ ও ৫০০০ টাকা হলে ৮.৫ লাখ।
৬) পেনশন কারীর মৃত্যুর পর কোথায় যোগাযোগ করতে হবে ?
নির্দিষ্ট ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে যেখানে অটল পেনশন যোজনা করা হয়েছিল। বা এনএসডিএল এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন বিস্তারিত জানার জন্য।
আপনি যদি ৫০০০ টাকার বেশি পেনশন নিতে চাইছেন তাহলে এনপিএস অর্থাৎ ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।
পার্সোনাল এক্সিডেন্ট ইন্সুরেন্স এর জন্য এস বি আই পার্সোনাল এক্সিডেন্ট ইন্সুরেন্স একটি ভাল অপশন হতে পারে। যেখানে ১০০০ টাকার বিনিময়ে ২০ লক্ষ টাকার বিমা পাওয়া যায়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বীমা বা যে কোন স্কিমে নাম নথিভুক্ত করার পূর্বে বীমা বা স্কিম সংক্রান্ত নথি ভালো ভাবে যাচাই করে তবেই করবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ